নাইজারের অভ্যুত্থানকারী
নেতা পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করে বেসামরিক শাসনে ফিরতে
তিন বছর লাগবে বলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশটিতে যেকোনো আক্রমণে জড়িতদের জন্য হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেন তিনি। খবর আলজাজিরার।
গতকাল শনিবার (১৯
আগস্ট) গভীর রাতে নাইজারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেন জেনারেল আবদুরাহমান তচিয়ানি।
তবে, ভাষণে ক্ষমতার স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি এই সামরিক
জান্তা। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের সংলাপে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই পদক্ষেপের
বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করা হবে।
নাইজেরিয়ার
রাজধানী নিয়ামেতে ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটসের (ইকোওয়াস) প্রতিনিধিদের
সঙ্গে প্রথম বৈঠক শেষে জেনারেল আবদুরাহমান তচিয়ানি বলেন, ‘দেশের সুরক্ষার জন্য জাতীয় কাউন্সিল
বা নাইজারের জনগণ কেউই যুদ্ধ চায় না এবং সংলাপের পথ উন্মুক্ত।’
‘তবে একটি বিষয় পরিষ্কার, যদি আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা হয়, তাহলে
তা খুব একটা সহজ হবে না’, বলেন তচিয়ানি।
ইকোওয়াস ২৬
জুলাই অভ্যুত্থানের পর নাইজারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং দেশটিতে সাংবিধানিক
শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ‘স্ট্যান্ডবাই ফোর্স’ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। জোটটি গত শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বলেছে, সম্ভাব্য
সামরিক হস্তক্ষেপ শুরুর জন্য একটি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫ সদস্যের মধ্যে ১১টি দেশ
অভিযানে সৈন্য পাঠাতে সম্মত হয়েছে।
১২ মিনিটের
ভাষণে জেনারেল তচিয়ানি বলেন, ‘ইকোওয়াস বিদেশি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় দখলদার বাহিনী দিয়ে নাইজার আক্রমণের
জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।’ আঞ্চলিক জোটটির আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে ‘অবৈধ’ ও ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানান তিনি।
আবদুরাহমান
তচিয়ানি বলেন, ‘আমি আবারও নিশ্চিত করছি, আমাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা
নেই। আমি আরও নিশ্চিত করছি, নাইজারের গর্বিত ও প্রাণোচ্ছল জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে বিবেচনায়
নেওয়া হলে আমরা যেকোনো সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
নাইজেরিয়ার
সাবেক প্রেসিডেট জেনারেল আব্দুল সালামি আবুবকরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি সামরিক শাসক
নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া তচিয়ানির সঙ্গে দেখা করার পর ইকোওয়াসের
প্রতিনিধি দলটি পৃথকভাবে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমের সঙ্গেও দেখা করেছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকে নিয়ামেতে গৃহবন্দি রয়েছেন বাজুম।
আবুবকর বলেন,
‘আমরা
বাজুমের সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা তার কাছ থেকে শুনেছি—তার সঙ্গে কী করা হয়েছে। তিনি
যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সেগুলো আমাদের জানান। আমরা তা (ইকোওয়াস) নেতাদেরকে অবগত
করব। নিঃসন্দেহে, বৈঠকটির মধ্যে দিয়ে এই সংকট সমাধানে আলোচনার সূচনা হয়েছে।’