‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,
ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফার ময়দান। আজ
৯ জিলহজ মঙ্গলবার পবিত্র হজ। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা
ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ পালন করছেন।
সাদা সফেদ-শুভ্র
দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিদের উপস্থিতিতে সাদায় একাকার হয়ে উঠেছে ময়দান। ফজরের
পর সারাবিশ্ব থেকে আগত ২৩ লাখ মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।
আজ ৯ জিলহজ
মূল হজের দিন হাজিরা আরাফাতের ময়দানে থাকবেন সূর্যাস্ত পর্যন্ত। চার বর্গমাইল আয়তনের
এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণে মক্কা, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে
আরও প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত। হাজীরা নিজেদের মতো সুবিধাজনক স্থান বেছে নিয়ে ইবাদত
করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং যোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন।
আরব নিউজ সূত্রে
জানা গেছে, আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় খুতবা পাঠ করবেন গ্র্যান্ড ইমাম। সূর্যাস্তের
পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন হাজীরা এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব
ও এশার নামাজ আদায় করে সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি
কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করা হয়।
১০ জিলহজ মিনায়
পৌঁছার পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজীরা
দাঁড়িয়ে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা।
অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথার চুল ফেলে
দেয়া। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত।
প্রথম দিন মিনায়
পৌঁছে শয়তানকে সাতটি কংকর নিক্ষেপ, মাথা মুণ্ডন ও কোরবানি দিয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা
শেষ করে ঈদ পালন করবেন হাজীরা।
সৌদির পরিসংখ্যান
অনুসারে- গত বছর ৯ লাখ ২৬ হাজারেরও বেশি লোক হজ পালন করেছেন। এর আগের বছর ২০২১ সালে
প্রায় ৫৯ হাজার জন হজ পালন করেন। আর ২০২০ সালে শুধু সৌদিতে অবস্থানরত ১০ হাজার মুসলিম
হজের সুযোগ পেয়েছিলেন। অথচ করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ লোক হজ পালন
করেন। এবার কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ সম্পূর্ণভাবে তুলে নেয়া হয়েছে এবং বয়সের সীমা বাতিল
করা হয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম
পবিত্র হজ পালন করবেন।