রাজশাহী মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জেরে হামলার ঘটনায় ৩০০
শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে রামেক প্রশাসন। তবে এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করেনি।
বৃহস্পতিবার
(২১ অক্টোবর) বিকেলে রামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাদী হয়ে নগরীর
রাজপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীকে।
হাসপাতালের পরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানীর অনুমতি নিয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন প্রশাসনিক
কর্মকর্তা।
বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম। তিনি
বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ছোট একটি এজাহার পাওয়া গেছে। সেটি তদন্ত করে
আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা
গেছে, লিখিত ওই এজাহারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে, হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে
রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছশৃঙ্খল ছাত্রের নেতৃত্বে
৩ শতাধিক ছাত্র হাসপাতালে হামলা চালায়। তারা চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, হাসপাতালের বিভিন্ন
ওয়ার্ড ও প্রশাসনিক ব্লকসহ বিভিন্ন কক্ষের দরজা-জানালা এবং হাসপাতালের বারান্দায়
রক্ষিত ফুলের টবসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।
চিকিৎসক, নার্স
ও অন্যান্য কর্মচারীদের গালিগালাজ, লাঞ্ছিত ও মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারি
কাজে বাধা দান এবং সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করেন।
জানা গেছে, বুধবার
রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিনতলার বারান্দা থেকে
পড়ে যান শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার। তিনি ৩৫৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন। মার্কেটিং বিভাগের
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। মুমূর্ষু
অবস্থায় তাকে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নেন শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের
অভিযোগ, আহত শাহরিয়ারকে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক আইসিউতে নিতে বলেন। কিন্তু
সেখানে নিতে চিকিৎসকের রেফারেন্স দিতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগেই মারা যান
ওই শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার প্রতিবাদ
করায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এ সময় চারজন শিক্ষার্থী গুরুতর
আহত হন। তাদের বাইরের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল
পরিচালকের দপ্তরে ভাঙচুর চালান।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের
সঙ্গেও তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হলেও ঘটনার
নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ রাবি শিক্ষার্থীরাই তাদের ওপর হামলা
চালিয়েছেন। এ ঘটনায় দুই দফা দাবিতে তারা ধর্মঘট শুরু করেন।
এ বিষয়ে জানতে
চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের
মেরে আহত করেছে তারা। আমরা তদন্ত কমিটির ওপর ভরসা করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলে এসেছি।
তারা যদি আমাদের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তাহলে কাল আমরাও দুটো মামলা করব।
প্রথমত হত্যা মামলা কারণ তাদের বিলম্বের কারণে শাহারিয়ার মারা গেছেন। দ্বিতীয়তো হত্যা চেষ্টা কারণ আমাদের শিক্ষার্থীদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে চারজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে রামেকে চিকিৎসাধীন।