Logo
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে ধীর হয়েছে মূল্যস্ফীতির গতি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | ৫১০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রে ভোগ ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির গতিও ধীর হয়েছে। গত মাসের মূল্যস্ফীতি ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও ফেডারেল রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দ্রুত ধীর হচ্ছে না মূল্যস্ফীতি। সুতরাং মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এসব তথ্য ঋণের পেছনে ক্রমবর্ধমান খরচের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির কার্যক্রম ধীর হয়ে পড়ার চিত্র তুলে ধরছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবাসন থেকে শ্রম পর্যন্ত সব কিছুর চাহিদা কমানোর চেষ্টা করছে। মুদ্রানীতি কঠোর করার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হিমশিম খাচ্ছে ফেড। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান পিএনসি ফাইন্যান্সিয়ালের প্রধান অর্থনীতিবিদ গাস ফোচার বলেন, ফেডের দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতি সঠিক দিকে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা অনেক ধীরে।

পরিসংখ্যান সংস্থা সেনসাস ব্যুরো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি অবদান রাখা ভোক্তা ব্যয় নভেম্বরে মাত্র দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। অক্টোবরেও এটি দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছিল। গত মাসে ভোক্তা ব্যয় বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়েও পিছিয়ে রয়েছে। রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা দশমিক ২ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

খুচরা বিক্রি ধীর হয়ে যাওয়ার এ পরিসংখ্যান ভোগ ব্যয় পণ্য থেকে পরিষেবায় পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করছে। কিছু পণ্যের মূল্য বাড়ার কারণে পরিমাণের হিসাবে কমলেও অর্থের হিসাবে ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গত মাসে টেকসই পণ্যের ব্যয় ২ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। বিশেষ করে গাড়ি বিক্রিতে পতন এসব পণ্যের বিক্রি কমাতে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া গৃহস্থালি আসবাব ও অন্যান্য সরঞ্জামের পাশাপাশি বিনোদনমূলক সামগ্রীর ব্যয় কমে গিয়েছে। নভেম্বরে দেশটির পরিষেবাগুলোয় ব্যয় আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আবাসন ও ইউটিলিটিগুলোর পাশাপাশি আর্থিক পরিষেবা ও বীমা এ খাতের ব্যয় বাড়াতে সহায়তা করেছে। এদিকে গত মাসে ব্যক্তি খরচের মূল্য সূচক দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। অক্টোবরে এটি দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছিল। এ সময়ে খাদ্যের দাম মাসভিত্তিক দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর সর্বনিম্ন। জ্বালানি পণ্য ও পরিষেবার মূল্য ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে ব্যক্তি খরচের বছরওয়ারি মূল্য সূচক নভেম্বরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এ হার ২০২১ সালের অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। এর আগে অক্টোবরে এ হার ৬ দশমিক ১ শতাংশে ছিল।

ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতির সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তি খরচের মূল্য সূচক বিবেচনায় নিয়ে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মূল্যস্ফীতি ধীর হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আগামীতে তৈরি হওয়া প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। একটি বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, আগামী বছর অর্থনীতিতে আরো উত্থান-পতন হবে। তবে বিপর্যয় থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আমরা অনেক অগ্রগতি করেছি এবং আমি সামনের বছর নিয়ে আশাবাদী।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ থেকে ৪ দশমিক ৫০ রেঞ্জে উন্নীত করেছে। এ হার ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ। ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজর অ্যালায়েন্সের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ক্রিস জাকারেলি বলেন, মূল্যস্ফীতি মন্থর হতে চলেছে। এটি ফেডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোর একটি। কিন্তু এটি এমন সময়ে ঘটছে, যখন ভোক্তারা ব্যয়ের ক্ষেত্রে লাগাম টানছেন। এটি কিন্তু অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর নয়। মূলত মজুরি বৃদ্ধি ভোক্তা ব্যয় বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করছে। মহামারীর প্রভাব কমে যাওয়ায় পর থেকেই দেশটির শ্রমবাজার শক্তিশালী রয়েছে। গত মাসে ব্যক্তি আয় দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে ঋণের উচ্চ ব্যয়, ক্রমহ্রাসমান সঞ্চয় এবং পারিবারিক সম্পদের নিম্নমুখী প্রবণতা ভোক্তা ব্যয়কে স্তব্ধ এবং আগামী বছর অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিউজ ট্যাগ: মূল্যস্ফীতি

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩