Logo
শিরোনাম

ভাটায় পুড়ছে শিশুর স্বপ্ন

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১২৭৫জন দেখেছেন
Image

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি:

ইটভাটাগুলোতে থরে থরে সাজানো কাঁচা ইট। রোদে শুকানোর পর এগুলো উঠছে চুল্লিতে। আগুনের তাপে পুড়ছে ইট। সেই সঙ্গে পুড়ছে যেন শিশুর স্বপ্নও। কারণ, এসব ইটভাটায় অনেক শিশু লেখাপড়া বাদ দিয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে।

সম্প্রতি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কয়েকটি ইটভাটায় দেখা যায়, ভাটাশ্রমিকের সঙ্গে শিশুরাও কাজ করছে। ওদের বয়স ৭ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। এ সময় কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব শিশুর কেউ কেউ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়ছে। আবার কেউ কেউ এখন আর বিদ্যালয়ে যায় না। কেউ নিজে থেকেই, আবার কেউ মা-বাবার সঙ্গে ইটভাটার কাজে এসেছে। কাঁচা ইট রোদে শুকানো, ইট তৈরি, ট্রলিতে করে ইট টেনে ভাটাস্থলে পৌঁছানো, মাটি বহন করাসহ সব কাজেই নিয়োজিত এসব শিশু।

সূর্যের আলো পুরোপুরি উঠার আগেই ৮ থেকে ১১ বছর বয়সী সাকিল, মিরাজ, লালচাঁচ, নুপুর, রশিদদসহ আরও অনেক শিশু শ্রমিক ইট টানার কাজ শুরু করে দিন শেষে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার ইট বহন করে প্রতিদিনই। বিনিময়ে টাকা দিয়ে কি করবে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে অধিকাংশ শিশুই জানি না বলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। পারিবারিক অভাব-অনটনের শিকার হয়ে পড়ালেখা বাদ দিয়ে শিশুরা ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করছে।

নুপুর (১০) ও লালচাঁদ (৮) তারা দুইজনেই ভাই বোন কেবলই শুরু করেছিল স্কুলে যাওয়া কিন্তু বেশি দিন নয় অজ্ঞাত কারণে বাবার সাথে সেও ইট ভাটার শ্রমিকের কাজ করছে। রশিদ (১১), শাকিল (১০) নয় এমন আরও অনেক শিশুরা কাজ করছে পাংশা উপজেলার যশাই ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ইট ভাটায়।

ইট ভাটার মালিক পক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে করে শিশুশ্রম করিয়ে যাচ্ছে। কতটা পালন করেছে তা জানতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৪ বছরের কম বয়সী এমন অনেক শিশুরা কাজ করছে দিব্বিতে। যে হাতে থাকার কথা ছিল বই খাতা তার পরিবর্তে অল্প বয়সী শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছে ইট তৈরির মতো কঠিন কাজ। শুধু ছেলে শ্রমিক নয় রয়েছে কিছু মেয়ে শ্রমিকও যাদের বয়স ১২ এর নিচে।

জানা যায় ইট পরিবহণের মতো এমন ভারী কাজ করতে গিয়ে অনেক শিশুকেই নানা দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। অনেক সময় মারাত্মক আহত হতে হয়। আহত বা অসুস্থ হলে তাদের নেই কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা, খোঁজ নেয় না ভাটা মালিক পক্ষ। যদিও উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কেএমবি ব্রিকস, কলিমহর ইউনিয়নের এমটিবিবি ব্রিকস এবং হাবাসপুর ইউনিয়নের এসকেবি ব্রিকস কর্তৃপক্ষ এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের ইট ভাটায় কোন শিশু শ্রমিক নেই।

এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী বলেন, যদি কোন ইট ভাটায় এমন শিশুশ্রম দেখা যায় তবে সেই ভাটার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজ ট্যাগ: ইটভাটা

আরও খবর