Logo
শিরোনাম

সাফারি পার্কে ১১ জেব্রাকে হত্যার অভিযোগ, বাঘের মৃত্যু গোপন

প্রকাশিত:রবিবার ৩০ জানুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ নভেম্বর ২০২৩ | ১৩০০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একের পর এক জেব্রার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিযোগ তুললেন, এই প্রাণীগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এমনও জানিয়েছেন, পার্কটিতে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে, যে তথ্য কর্তৃপক্ষ গোপন করেছে।

গত ১ মাসে সেখানে ১১টি জেব্রার মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যে রোববার পার্কটিতে যায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের করা কমিটি। তাদের সঙ্গে ছিলেন গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন।

পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য সাংবাদিকদেরকে জানান, তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, পার্কে ওই ১১ জেব্রার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। জেব্রাগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে একে অপরকে ফাঁসানোর জন্য এই জেব্রাগুলো হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি মামলা করব।

গত মাসে সাফারি পার্কে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এটা কেউ জানে না। এত মূল্যবান প্রাণী মারা যাচ্ছে, অথচ পার্ক কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করে যাচ্ছে। পার্কে ১০টি বাঘ ছিল, একটি পুরুষ বাঘ মারা যাওয়ায় এখন মোট বাঘের সংখ্যা ৯টি।

বাঘ মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকারো করেছেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান। তার দাবি, ওই বাঘটি বেষ্টনীতে পায়ে আঘাত পেয়েছিল। এরপর এটি দুই মাস অসুস্থ ছিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক রফিকুল আলম অসুস্থ বাঘটির সার্জারি করেছিলেন। দেড়-দুই মাস পর অসুস্থ বাঘটি খাবার কমিয়ে দেয়। এরপর গত ১২ জানুয়ারি মারা যায়। মৃত্যুর পর বাঘের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের একটি প্রতিবেদন এসেছে। তবে সেই প্রতিবেদনটি খারাপ রিপোর্ট হওয়ায় প্রকাশ করা হয়নি। রিপোর্টটি প্রকাশ হলে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে। যে কারণে কনফার্ম না হয়ে বলা যাচ্ছে না।

আতঙ্ক ছড়ানোর মতো কী আছে রিপোর্ট? জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিপোর্টে যে ধরনের জীবানুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে তা এই এলাকায় সাধারণত দেখা যায় না। জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর এ বি এম শহীদ উল্লাহ প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করেছেন। আমরা কনফার্ম হওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনটি পূনরায় করার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি। বাঘের মৃত্যুর বিষয়টি এ কারণেই প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে জাতীয় চিড়িয়াখানায় একটি সিংহের মৃত্যুর সময় একই রিপোর্ট এসেছিল। এটা এলার্মিং, সবার জন্য এলার্মিং এটা।

জেব্রাগুলোকে হত্যার অভিযোগ তদন্তে সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদেরকে বদলি করা জরুরি বলেও মনে করেন সংসদ সদস্য ইকবাল।

তিনি তদন্ত কমিটির সদস্যদের বলেন, যাদের তত্ত্বাবধানে জেব্রা মারা গেছে তাদেরকে স্বপদে বহাল রেখে সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়। এতে পার্কের অন্যান্য কর্মচারীরা মুখ খুলতে সাহস পাবে না। পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমানকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তারপর তদন্ত করতে হবে।

এমপি ইকবালের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীরের ভেতর থেকে হাতির খাবার পাচার করা হয়ে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তিনি জানাননি তিনি।

পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। কর্মকর্তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটি প্রশাসনের বিষয়।

পার্কে গত ২ জানুয়ারি থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ১১ জেব্রার মৃত্যু হয়।


আরও খবর