Logo
শিরোনাম

রাশিয়াকে চেপে ধরতে ‘বহুমুখি নিষেধাজ্ঞা’ পশ্চিমাদের

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | ১০৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অঙ্গীকার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু মার্কিনীরাই নয়, এই নিষেধাজ্ঞায় তাদের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়ে, ইউরোপীয়ান দেশগুলোসহ বেশ কয়েকটি মিত্র দেশ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের সামনে এমন কথাই জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আসছে সময়ে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে রাশিয়া।

এ সময় বাইডেন হুঁশিয়ার দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ফলে মস্কোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমাবদ্ধ হবে। রাশিয়ার ওপর সামনে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসছে।

আমেরিকায় কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন ৪টি ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বাইডেন। সেখানে তাদের অন্তত এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ রয়েছে, যা মার্কিন সরকার জব্দ করার ঘোষণা দিয়েছে। এই সব প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না এবং কোনো মার্কিন নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ১৩টি বড় কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের মার্কেট থেকে অর্থ তুলতে পারবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।

ইউরোপীয় দেশগুলোও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা শুরু করেছে। রাশিয়ার পাঁচটি ব্যাংক, ব্যাংক রোসিয়া, ব্ল্যাক সি ব্যাংক, জেনব্যাংক, আইএস ব্যাংক ও প্রোমসভাইজ ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রিটেন। পূর্ব ইউরোপের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন থাকা ব্যাংকগুলোকে কালোতালিকাভুক্ত করতেও রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই সঙ্গে রাশিয়ান ব্যাংক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী ও বেশ কয়েকজন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এদিকে কয়েকটি দিক থেকে ইউক্রেনে ঢুকে পড়েছে রুশ বাহিনী। ইতোমধ্যে রাজধানী কিয়েভেও ঢুকে পড়েছে তারা। ইউক্রেন বলছে, রুশ সেনাবাহিনীর যানবাহন উত্তরে বেলারুশ ও দক্ষিণে ক্রিমিয়া ছাড়াও বেশ কয়েকটি অংশ দিয়ে ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে। রুশ সেনাবাহিনীর বহর ইউক্রেনের উত্তরে চেরনিহিভ ও সুমি অঞ্চল দিয়ে এবং পূর্বাঞ্চলে লুহানস্ক ও খারকিভ অঞ্চল দিয়ে দেশটির ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানাচ্ছে ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, ডিপিএসইউ। ডিপিএসইউ জানায়, কামানের গোলা চালানোর পর রুশ সেনাবাহিনী সীমান্তের ভেতরে আগ্রাসন শুরু করে।

সংস্হাটি জানিয়েছে, ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনী শত্রুকে প্রতিহত করতে সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়া পুরোদস্ত্তর হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনের পূর্বে তীব্র বোমা হামলা শুরু করেছে। ঐ বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, কিয়েভের কাছে বরিস্পিল বিমানবন্দরসহ একাধিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ বিমান হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী লড়াই করছে বলে বলা হয়েছে ঐ বিবৃতিতে। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর নগরী ওদেসায় রুশ প্যারাট্রুপার নামার খবর অস্বীকার করা হয়েছে ঐ বিবৃতিতে।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্হানীয় গণমাধ্যম জানায়, কিয়েভে দেশটির সেনাবাহিনী হেডকোয়ার্টারে এবং মিসাইল কমান্ড সেন্টারে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনের শহরে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তারা দেশটির সেনা স্হাপনা, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্হা ও বিমান বাহিনীর ওপর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্ত্ততে আঘাত করতে সক্ষম অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দেশটির পশ্চিমে ইভানো-ফ্র্যাকিভস্ক বিমানবন্দর। ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে গতকাল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। তবে কিছু কিছু বিস্ফোরণের সংবাদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাজধানী কিয়েভসহ দোনেত্স্ক অঞ্চলের ক্রামাতর্সকে বিস্ফোরণের খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ, দক্ষিণের ওদেসা এবং পূর্বাঞ্চলের দোনেত্স্ক ওবলাস্ত এলাকায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

ব্রিটিশ গোয়েন্দারা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ইউক্রেনে ৮০ টির বেশি হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের কাছে একটি বিমান ঘাঁটি রাশিয়ার সৈন্য দখল করেছে বলে জানা গেছে। এক ভিডিও ফুটেজে পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কাছে চুগুয়েভ সামরিক বিমান ঘাঁটিতে আগুন ও কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। সূত্র অজানা হলেও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা গেছে।

রাশিয়া থেকে রকেট হামলা চালানোর খবরও পাওয়া গেছে। মস্কো দাবি করেছে, বৃহস্পতিবারের সেনা অভিযানে ইউক্রেনের অন্তত ৭৪টি সামরিক স্হাপনা ধ্বংস হয়েছে। ইউক্রেনের পুলিশ জানায়, দেশজুড়েই রাশিয়ার হামলা শুরু হয়েছে। তারা রুশ হামলার অন্তত দুই শতাধিক নির্দশন দেখতে পেয়েছেন। ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একাধিক খবর প্রকাশ করা হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে যে প্রতিবেশি দেশ বেলারুশের সেনারাও রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে অভিযানে যোগ দিচ্ছে। এদিকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তাদের সৈন্য রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেলারুশকে এই সেনা অভিযানে যোগ না দিতে আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা বেলারুশকে রাশিয়ার মক্কেল রাষ্ট্র হিসেবে বলে থাকেন।


আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩