Logo
শিরোনাম

মরিয়ম মান্নান ও তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করার দাবি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

আলোচিত মরিয়ম মান্নান, তার মা রহিমা বেগম ও পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে তাদের করা অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের পরিবার। একই সঙ্গে মরিয়ম মান্নানদের করা হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও জানান তারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন মরিয়ম মান্নানদের করা মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে রহিমা অপহরণ মামলার আসামি মো. মহিউদ্দীনের নবম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে মালিহা মাহি। সংবাদ সম্মেলনে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, মো. মহিউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ওরফে পলাশ, নুরুল আলম ওরফে জুয়েল এবং হেলাল শরীফের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  তাদের সবার বাড়ি খুলনা পৌর শহরের দৌলতপুরের থানাবাড়ি এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে মালিহা মাহি বলে, খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ির রহিম বেগম নিখোঁজ হওয়ার ২৯ দিন পর উদ্ধার হয়। রহিমার উদ্ধারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মরিয়ম মান্নানসহ তার পরিবার কথিত অপহরণের নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। কিন্তু আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত যে, অপরাধ করেও পুলিশ প্রশাসনসহ নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে এখনো পর্যন্ত তারা হয়রানি ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন।

মাহি বলে, অপহরণের নাটক সাজানো রহিমা বেগম ও তার মেয়ে মরিয়মসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। রহিমার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় যে মামলা করেন, তাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলায় প্রতিবেশী খানাবাড়ি এলাকার মো. মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম পলাশ, মো. জুয়েল, হেলাল শরীফ অপহরণ করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।

সে বলে, তবে রহিমা বেগমের বাড়ির চারপাশে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে র‌্যাব-৬ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একাধিকবার পাঁচজনকে ডেকে নিয়ে কয়েকদফা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ না পেয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার এক সপ্তাহ পর মরিয়ম মান্নান প্রভাব খাটিয়ে দৌলতপুর থানা-পুলিশকে দিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করান।

মালিহা মাহি বলেন, নিখোঁজের ২৯ দিন পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে রহিমা বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া কুদ্দুস মোল্লার গ্রামের বাড়ি থেকে রহিমাকে জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রশাসন। উদ্ধারের সময় তার কাছ থেকে ব্যবহারের যেসব কাপড়-চোপড়, ওষুধ ও প্রসাধনীসামগ্রী উদ্ধার করা হয়, তা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে যে, তিনি অপহরণ না-ও হতে পারেন। তারা বলেছেন যে কেউ অপহৃত হলে কীভাবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যাগে করে নিয়ে যান?

মাহি বলে, রহিমা বেগম ফরিদপুরে যে এলাকায় ছিলেন, সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে জন্মনিবন্ধন বানাতে গিয়েছিলেন। আমরা মনে করি, রহিমা বেগম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পরিবর্তন করে ময়মনসিংহের ফুলপুরে অজ্ঞাত যে নারীর মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল, ওই মরদেহের পরিচয় দেওয়ার জন্যই জন্মনিবন্ধন আনতে গিয়েছিলেন। এখান থেকে আবার নতুন করে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।

লিখিত বক্তব্যে গ্রেপ্তার মহিউদ্দিনের মেয়ে মালিহা মাহি বলে, রহিমা বেগম এর কাছে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে খুলনায় না এসে কেন ফরিদপুর গেলেন? রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজের মোবাইল নম্বরে ফরিদপুর থেকে কল করে জানানো হয় তার মা ফরিদপুরে আছেন। অথচ মিরাজের স্ত্রী মৌ ইসলাম কল রিসিভ করে এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না বলেও জানান। কেন মিরাজের স্ত্রী বিষয়টি প্রশাসন ও মরিয়ম মান্নানকে জানাননি?

মাহি অভিযোগ করে, উদ্ধারের পর রহিমা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সামনে মুখ বন্ধ রেখে রহস্যজনকভাবে নির্বাক থাকেন। পরে রহিমা বেগম যার জিম্মায় ছিলেন, সেই নারী পুলিশ কর্মকর্তা দোলা দে জানিয়েছেন, রহিমা তার মেয়ে ও স্বামীর কাছে যেতে চান না। কিন্তু মেয়েদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরই তিনি তার বক্তব্য পাল্টে ফেলেন। পরে আদালত থেকে মেয়ের সঙ্গেই তিনি বাড়ি চলে গেছেন। এ থেকে স্পষ্ট রাহিমা বেগম তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে নতুন নাটক করছেন।

আদালতে রহিমা বেগমের দেওয়া জবানবন্দি প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রহিমা বেগম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন যে, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। স্ট্যাম্পে সই করানোর কথা বলা হয়েছে। এটাও নতুন ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি আমরা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মালিহা মাহি বলে, রহিমা বেগম, তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও আদুরী আক্তারসহ অপহরণ নাটক ও মিথ্যা মামলা দিয়ে পাঁচজনকে জেল খাটানোয় জড়িতদের বিরুদ্ধে তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন খানাবাড়ি এলাকার মো. মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম পলাশ, মো. জুয়েল ও হেলাল শরীফ।


আরও খবর