আজ ঈদ
পৌরসভার অনুমোদনহীন নকশায় এগিয়ে চলছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) বহুতল ভবনের কাজ। মাভাবিপ্রবি শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাতটি নতুন বহুতল ভবনের কোনোটির পৌরসভার অনুমোদন নেয়া হয়নি।
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯-এর দ্বিতীয় তফসিলের ক্রমিক নং ৩৫ অনুযায়ী পৌর এলাকার অভ্যন্তরে সব সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণের আগে পৌরসভার কাছ থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হবে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারীকৃত এ আদেশ অমান্য করে প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনগুলোর নকশা অনুমোদনহীনভাবে নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা উন্নয়ন ওয়ার্কস (পউও) বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ও উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কিছু ক্ষমতা থাকে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। এছাড়া তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে সব কথা মোবাইল ফোনে বলা যাবে না। আপনি সামনে আসেন তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনার সঙ্গে কথা বলবে।
জানা যায়, নির্মাণকাজের অনুমোদনবিহীন নকশার কারণে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ প্রকল্পের আওতায় মাল্টিপারপাস ভবনের ঢালাইয়ের সময় ক্যান্টিলিভার পোর্স ভেঙে ১৮ শ্রমিক গুরুতর আহত হন। এ বিষয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঘটনাটি চাপা দেয়ার জন্য নামমাত্র তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় যে ঢালাইয়ের ত্রুটির কারণে সমস্যাটি হয়েছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী ভবনটির নকশায় পরিবর্তন করে ক্যান্টিলিভার স্লাবের একটি কলাম সাপোর্ট প্রদান করেন। বিষয়টি নামমাত্র পউও কমিটির ৪৭তম সভায় টেবিল এজেন্ডা হিসেবে আলোচনা করা হয়।
টাঙ্গাইল পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে পরপর দুবার চিঠি দেয়া হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। তারা নিয়ম না মেনেই ভবনের কাজ করছেন।
এ বিষয়ে মাভাবিপ্রবির নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, ভবনের নকশায় পৌরসভার অনুমোদনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই ভালে বলতে পারবেন। মাল্টিপারপাস ভবনের ঢালাইয়ের সময় ক্যান্টিলিভার পোর্স ভেঙে ১৮ শ্রমিক গুরুতর আহত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পে প্রয়োজনে নকশার পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার সুযোগ আছে, যা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সম্পাদন হয়ে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী আবু তালেব বলেন, পৌরসভা থেকে অনুমতি নিতে গেলে অর্থের দরকার। এখানে আমাদের কোনো বরাদ্দ নেই। আমরা বলেছি ভবিষ্যতে প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) যখন করব, তখন এ খরচটা ধরে দেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিল্ডিং যারা করেন তারা তো নিয়মকানুন জেনেই করেন। এটা তাদের ব্যাপার, পুরোটাই দেখেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী। এটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃকতা নেই। আমার কাছে যে পত্রটা এসেছিল আমি সেটা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনগুলোর নকশার অনুমোদন নেই। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে। মিটিংও হয়েছে, ভবিষ্যতে তারা পৌরসভার নিয়মনীতি মেনেই কাজ করবেন।
