Logo
শিরোনাম

মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করাকেই বড় চ্যালেঞ্জ: নতুন সিইসি

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তার নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল প্রয়াস হবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) করা এবং দলগুলোর আস্থা অর্জন করা। মানুষের মধ্যে যে ভোট বিমুখতা তৈরি হয়েছে, সেটি লক্ষ্য করেছেন সদ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ জন্য মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করাকেই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তিনি।

শনিবার (২৬ ফেব্রুযারি) বিকেলে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ নতুন কমিশন নিয়োগ দেওয়ার পর রাতে হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের কাছে এ প্রয়াসের কথা জানান।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটা আমাদের একটা হেরিটেজ যে (নির্বাচনে) কিছুটা সহিংসতা হয়। কারণ সবাই তার প্রার্থীকে জয়ী করতে চায়। এটা করতে গিয়ে সমর্থকদের মধ্যে ‍উল্লাসের কারণে হোক বা স্বতঃস্ফূর্ততার কারণেই হোক অনেক সময় সাংঘর্ষিক হয়ে যায়, সেই জিনিসটা আমরা চাইব না। সহিংসতা ও সাংঘর্ষিক অবস্থাটা যতটা কমিয়ে আনা যায়, যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সেই দায়িত্বটা পালন করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করবে।

মানুষকে ভোটমুখী করতে কী উদ্যোগ নেবেন, এ প্রশ্নে হাবিবুল আউয়াল বলেন, মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করার চেষ্টাই তো আমাদের করতে হবে। সেটাই তো বড় একটা চ্যালেঞ্জ। মানুষের মধ্যে যেন আস্থা ফিরে আসে, নির্বাচন হবে এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ হবে, ভোটাধিকার যে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার, সম্পদ, এটা যে একটা পাওয়ার, ভোটারদের মধ্যেও এই সেনসেটাইজেশনটা ক্রিয়েট করা দরকার। প্রত্যেকটা মানুষের একটা ভোটের অধিকার আছে, সেটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। কিছুটা ভোট বিমুখতা আমরা লক্ষ্য করেছি। নিজেদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্র নিয়ে যেতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলেরও দায়িত্ব রয়েছে।’

রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন নিয়ে যাতে প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে জন্য কী পদক্ষেপ নেবে, এমন প্রশ্নে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা সকলের সঙ্গে কথা বলব। আমার বিশ্বাস আমার সহকর্মীরাও এগ্রি করবেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যেটা সেটা তো আরও নিচে গিয়ে, ওপরের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আমরা তো একটি দলের সঙ্গে কথা বলব তা নয়, সব দলের সঙ্গে কথা বলব, তাদের সহায়তা কামনা করব, তাঁরা কী প্রত্যাশা করেন, আমরা কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব— এটা কিন্তু টু ওয়ে ট্রাফিক— এটা আলোচনা হবে। আমি আশা করি বিএনপিও আসবে।’

নির্বাচন বর্জন করে নয়, নির্বাচনে দৃঢ় ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে— নির্বাচনের ক্ষেত্রটা কিন্তু মন্থর না— আমার শৈশব থেকে আমি দেখে এসেছি, গ্রামে যে বাপ-চাচাদের ইলেকশন, ইউনিয়ন কাউন্সিলের (পরিষদের) মেম্বার-চেয়ারম্যান (নির্বাচন) সেখানেও কিন্তু আজ থেকে ৬০-৭০ বছর আগেও আমি ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখেছি। সেটাকে মেনে নিয়েই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। এটা নির্বাচনের একটা অপরিহার্য অনুষঙ্গ— কিছুটা সাংঘর্ষিক হবে, সে জন্য আমি মাঠ ছেড়ে চলে যাব, নির্বাচন করব না…আপনি মাঠ ছেড়ে দিয়ে বলবেন নির্বাচন হয়নি, তাহলেও কিন্তু হবে না। যোগ করেন সিইসি।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, আন্তরিকভাবে যদি আমি দায়িত্ব পালন না করি নিশ্চয়ই আমার বিবেকের কাছে দায়ী থাকব। আমি চাইব শপথের প্রতি অনুগত থেকে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করি। প্রতিবন্ধকতা আসবে কী আসবে না তা তো আগাম বলতে পারব না।

এদিকে সার্চ কমিটি যখন বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে নাম আহ্বান করেছিল তখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন তিনি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ আটজনের নাম প্রস্তাব করেছেন। হাবিবুল আউয়ালকে সিইসি করায় ডা. জাফরুল্লাহ খুশি হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

তবে সিইসি হিসেবে নিয়োগের জন্য নাম কে প্রস্তাব করেছিলেন তা জানেন না হাবিবুল আউয়াল। নিজেও নাম প্রস্তাব করেননি বলে জানান তিনি। হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের ওপর শক্ত দায়িত্ব আরোপিত হয়েছে।

নবনিযুক্ত সিইসি বলেন, শপথ নেওয়ার পর বিগত কমিশন কতটা সফল, কতটা বিফল সেটা পর্যালোচনা করতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে বিফল হলে কেন বিফল হলো, সফল হলে কোন কৌশল অবলম্বন করে সফল হয়েছে সেটাও আমাদের দেখতে হবে। কিছুটা অভিজ্ঞতা আমরা আগের কমিশন থেকে নিতে পারব। বিগত কমিশনে যারা ছিলেন তাঁদের আমন্ত্রণ জানাব, পরামর্শ নেব।


আরও খবর