Logo
শিরোনাম

ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে চোখে অন্ধকার দেখছেন কৃষক

প্রকাশিত:বুধবার ২০ এপ্রিল ২০22 | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ১৫৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

শেরপুর সদর উপজেলাসহ ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকার উঠতি বোরো ধান, গাছপালা, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে সবজির ক্ষেত এবং মুরগির খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, শিলা বৃষ্টি ঝড়ে ওই তিন উপজেলার কমপক্ষে ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে মাঠে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে শেরপুর সদর উপজেলার মোবারকপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে, শ্রীবরদী উপজেলার লংগরপাড়া, পশ্চিম ঝিনিয়া, খরিয়া, কুরুয়া, কুড়িকাহনীয়া, রহমতপুর এবং ঝিনাইগাতীর জগৎপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় এবং একই সঙ্গে শিলাসহ মুশলধারে বৃষ্টি হয়। এতে কয়েক সহস্রাধিক বিঘা জমির পাকা ধান শিলার আঘাতে ঝড়ে পড়েছে ও ঝড়ে আধা পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে গেছে। এছাড়া কিছু এলাকার নুয়ে পড়া ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

এবার সবেমাত্র ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তোলা  শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে শিলা বৃষ্টি কৃষকের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। কোনো কোনো কৃষক শিলা বৃষ্টির কারণে এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারবে না।

স্বপ্নের ফসল চোখের সামনে এভাবে নষ্ট হওয়ায় অনেকে কৃষক ক্ষেতের পাশে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আহাজারি করছেন। ওইসব এলাকায় কৃষকরা উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এখন তারা দিশেহারা হয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন। ধার দেনা কিভাবে পরিশোধ করবেন এবং ছেলে মেয়েসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে কি খাবেন তা ভেবে তা এখন  মহা চিন্তার সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও ফলদ গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলা বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ছাড়াও ঘরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন মুরগির খামারেরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়া ও তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ভোর থেকেই শহর ও বিভিন্ন গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের ৭ ঘণ্টা পর কিছু কিছু এলাকায় চালু হলেও এখনো অনেক এলাকা রয়েছে বিদ্যুৎবিহীন।

শ্রীবরদীর কুড়িকাহনীয়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নবিকুল ইসলাম, তমিজ উদ্দিন, মমতাজ মিয়া, ইয়াছিন মিয়া এবং কৃষাণী  রাহেলা বেগম, সাজেদা ও বকুল বেগম জানান, শিলাবৃষ্টিতে তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। একমুঠো ধানও ঘরে তোলা সম্ভব হবে না। ফলে আগামী দিনে কীভাবে চলবেন সেটা ভেবে কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না। পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান জানান, বোরো আবাদ  দিয়েই সারা বছরের খাবার চলে। শিলা ও ঝড়ে ধান নষ্ট  হয়ে গেছে। এখন আমার আর কোনো উপায় নাই।  সরকারের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তিনি।

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহিত কুমার দে জানান, প্রাথমিকভাবে সদর উপজেলার কিছু অংশসহ ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।

নিউজ ট্যাগ: কালবৈশাখী ঝড়

আরও খবর