Logo
শিরোনাম

জামায়াতের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ নভেম্বর ২০২৩ | ৮১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জামায়াতে ইসলামীর এদেশে কোনো রাজনীতি করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫১ বছর পরেও বিজয়ের চেতনা এখনও পুরাপুরি সফল হয়নি।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিজয় দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জিত হয়েছে ৫১ বছর আগে যা জাতির জন্য গৌরবের। কিন্তু দুঃখজনক হলো বিজয়ের চেতনা এখনো পুরাপুরি সফল হয়নি। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও জঙ্গিবাদের উত্থান আমাদের জাতীয় অগ্রগতির পথে আজ সবচেয়ে বড় বাধা। এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী, যারা ধার্মিক নয়, ধর্মের মিথ্যাচার করে ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কানি দিয়ে সমাজে বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে। তারা সমাজ ও দেশের শত্রু। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী কোনো দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকা অনুচিত। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াত-ই-ইসলামী জাতির কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়নি।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের অনেক অগ্রগতি থাকলেও দুঃখজনক ও সত্য, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করতে পারিনি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করলেও এখনও পুরাপুরি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্র সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা অধিকারের কথা বলি কিন্তু স্বস্ব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি না।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তিতে আজ আমাদের বলতে হয় স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল, তাদেরকে তাক লাগিয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ৫১ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩০গুণ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার। যা বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার ডলার। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে। মঙ্গা শব্দটি এখন শুধুই অতীত। দানা খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম, তৈরি পোশাকে দ্বিতীয়, ধান, মিঠা পানির মাছ ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের ৮৩ হাজার শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছে। যা আমাদের দেশের মর্যাদাকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করেছে। এসব অর্জন থেকে বলা যায় বিজয়ের চেতনা বৃথা যায়নি। তবে গত ৫১ বছরে দেশের অনেক অগ্রগতি হলেও এখনও বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি প্রতিরোধ করে সুশাসন ও সম্পদের সুষম বণ্টন করা। বাংলাদেশের এখনও বড় সমস্যা আর্থিক বৈষম্য। দেশের ৫২ শতাংশ সম্পদের মালিক ৫ শতাংশ মানুষ।

বিজয়ের চেতনা বৃথা যায়নি শীর্ষক এই বারোয়ারী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম শ্রেষ্ঠ বক্তা হবার গৌরব অর্জন করে ঢাকা ক্যান্ট. গার্লস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শায়লা নুশমা, দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আবরার ফাইয়াজ এবং তৃতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা যৌথভাবে ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের রাদিয়াহ তাসনিম খান ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের এইচ এম নাঈম সানজিদ।

প্রতিযোগিতায় আরও অংশগ্রহণ করেন তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ইয়াকুব ইসলাম শাহেদ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের আশফাকুল ইসলাম ইফাদ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার মাহমুদুল হাসান মাহমুদ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের সুমনা চাকমা ও আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের জিন্নিউন হক জীবা।

প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস. এম মোর্শেদ, সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম, সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয় ও উন্নয়ন কর্মী অনিতা ইসলাম।


আরও খবর