Logo
শিরোনাম

হেফাজতের তাণ্ডব: ৫৬ মামলার একটিতেও দেওয়া হয়নি চার্জশিট

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ নভেম্বর ২০২৩ | ১৫৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

আজ ২৬ মার্চ। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর জন্য এক আতঙ্কের দিন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের নারকীয় দিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। গত বছরের ২৬ মার্চ দুপুরের পর হেফাজতের নেতাকর্মীরা ও মাদরাসা ছাত্ররা প্রথমে হামলা শুরু করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে। এসময় রেলওয়ে স্টেশনের কন্ট্রোল প্যানেল, টিকিট কাউন্টার ও বুকিং কাউন্টারসহ সম্পূর্ণ স্টেশন আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এরপর ২৬-২৮ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেস ক্লাব, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১২ হন জন।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এসব ঘটনায় ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় চারটি, সরাইল থানায় দুটি ও রেলওয়ে থানায় একটি মামলার দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ হাজার মানুষকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১০টি মামলা সিআইডি, ৯টি পিবিআই, ২৭টি সদর মডেল থানায়, ডিবিতে চারটি, আশুগঞ্জে তিনটি, সরাইলে দুইটি ও রেলওয়ে থানায় একটি মামলা তদন্তাধীন আছে। তবে কোনো মামলাতেই অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ। এসব মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৭৫৮ জনের মধ্যে জামিনে আছেন ৬৩৮ জন।

হেফাজতের এই হামলার শিকার হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামিসহ অন্তত ছয় সাংবাদিক। মামলার তদন্তের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন বলেন, প্রেস ক্লাবে হামলার পর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে পায় পিবিআই। মামলা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পিবিআইয়ের সদস্যরা গত একবছরে কেবল একবার এসেছিলেন। প্রেস ক্লাবের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে হামলার মামলায় পিবিআইয়ের তদন্তের ভূমিকা নিয়ে বিস্মিত হচ্ছি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই নারকীয় হামলা গুলোর অভিযোগপত্র দেওয়া হোক। এসব অভিযোগপত্রে যেন সত্যিকারের যারা দোষী তাদের আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি প্রত্যাশা থাকবে কোনো নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, আমাদের কাছে যেসব মামলা রয়েছে তা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। সবগুলো মামলায় তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।


আরও খবর