Logo
শিরোনাম

ঘুরে আসুন বাংলা ভাষার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী মন্দির

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ নভেম্বর ২০২৩ | ৮৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

কবি চন্দ্রাবতী বাংলা ভাষার প্রথম নারী কবি হিসাবে স্বীকৃত। চন্দ্রাবতী ১৫৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা দ্বিজবংশী দাশ বিখ্যাত কাব্য মনসা মঙ্গল এর রচয়িতা এবং কবির মায়ের নাম সুলোচনা। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে পাতোয়াইর গ্রামের ফুলেশ্বরী নদীর পাশে কারুকার্য মন্ডিত দুটি শিবমন্দির রয়েছে। এই মন্দিরই কবি চন্দ্রাবতী শিব মন্দির বা কবি চন্দ্রাবতী মন্দির হিসাবে খ্যাত। ধারণা করা হয় এই মন্দিরগুলোর সাথে কবির জীবনের বিভিন্ন ঘটনার অনেক সম্পৃক্ততা রয়েছে। মন্দিরের কাছেই দর্শনার্থীদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা রয়েছে। প্রতিদিন বিকালবেলা ও বিভিন্ন ছুটির দিনে অনেক মানুষ কবি চন্দ্রাবতী মন্দির দেখতে আসেন।

ইতিহাস: প্রচলিত আছে কৈশোরে কবি চন্দ্রাবতীর সাথে ব্রাহ্মন যুবক জয়ানন্দের গভীর প্রণয় হয়। তাদের এ সম্পর্কের কথা মেনে কবির বাবা তাদের বিবাহের দিন ধার্য্য করেন। পরবর্তীতে জয়ানন্দ প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম নারীকে বিয়ে করেন। এই ঘটনায় কবি চন্দ্রাবতী ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন। এসময় উপাসনার জন্য তিনি পিতার কাছে একটি মন্দির স্থাপনের অনুরোধ জানান। কন্যার আবদার রক্ষায় দ্বিজবংশী দাশ ফুলেশ্বরী নদী তীরে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। আজ অবধি এই কবি চন্দ্রাবতী মন্দির ফুলেশ্বরী নদী তীরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

বিবরণ: কবি চন্দ্রাবতী মন্দিরিটি অষ্টভুজাকৃতির এবং এর উচ্চতা প্রায় ৩২ ফুট। মন্দিরের নিচতলায় আছে একটি কক্ষ রয়েছে, কক্ষের ভেতরে ৭টি কুলুঙ্গি রয়েছে। মন্দিরের দ্বিতীয় তলায় পোড়ামাটির সুদৃশ্য কারুকার্য সম্বলিত একটি প্রশস্ত কুলুঙ্গি আছে। দ্বিতীয় তলা থেকেই মন্দিরটি ক্রমশ সরু হয়ে উপরে ৩২ ফুট পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে। ১৯৯০ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চন্দ্রাবতী মন্দিরের সংস্কার কাজ করে।

যেতে হবে যেভাবে: কবি চন্দ্রাবতী মন্দির দেখতে যেতে হলে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে আসতে হবে। ঢাকা থেকে ট্রেনে অথবা বাসে করে কিশোরগঞ্জ আসতে পারবেন।

ঢাকা থেকে ট্রেনে কিশোরগঞ্জ: ঢাকা থেকে ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ আসতে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশান থেকে সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে এগারোসিন্ধুর ট্রেনে উঠলে ১১ টার মধ্যে কিশোরগঞ্জ পৌঁছে যাবেন। তারপর ইজিবাইক দিয়ে  চলে আসুন শহরের কেন্দ্রস্থ শহীদি মসজিদের সামনে। ঢাকা থেকে বাসে কিশোরগঞ্জ: বাসে করে আসতে চাইলে ঢাকার মহাখালী বা গোলাপবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে কিশোরগঞ্জ গামী যেকোন বাসে করে কিশোরগঞ্জের গাইটাল বাস চলে আসুন। মহাখালী থেকে আসতে চাইলে অনন্যা পরিবহনে আসুন। গোলাপবাগ থেকে আসতে চাইলে যাতায়াত বা অনন্যা সুপা পরিবহনে আসুন।

কিশোরগঞ্জ হতে চন্দ্রাবতীর মন্দির যাওয়ার উপায়: শহীদি মসজিদের সামনে থেকে নীলগঞ্জগামী ইজিবাইক চালককে চন্দ্রাবতীর মন্দিরের কথা বললে আপনাকে জালালপুর বাজার থেকে একটু সামনে চেয়ারম্যানের বাজারে নামিয়ে দেবে। সেখানে কবি চন্দ্রাবতী সম্পর্কে একটি রোড সাইন দেখতে পাবেন। ডান দিকের রাস্তা ধরে নরসুন্দা নদীর উপরে স্থাপিত সেতু পাড় হয়ে সর্বোচ্চ দশ থেকে পনের মিনিট হাঁটলেই কবি চন্দ্রাবতী মন্দির চোখে পড়বে। মন্দিরের কাছেই কবি চন্দ্রাবতীর বাড়ী দেখতে পাবেন। আবার শহীদি মসজিদের সামনের ইজি বাইক চালকদের বললে এরা চন্দ্রাবতীর বাড়ির সামনে নামিয়ে দেয়। শহীদি মসজিদের সামনে থেকে ইজি বাইকে বা অটো দিয়ে চন্দ্রাবতীর বাড়ি আসতে ৩০ মিনিট সময় লাগে।

কোথায় খাবেন: কবি চন্দ্রাবতী মন্দিরের আশেপাশে খাবারের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই, মন্দিরের কাছে ছোট দোকান রয়েছে। সবচেয়ে ভালো হয় কিশোরগঞ্জ শহরে ফিরে ধানসিঁড়ি, দারুচিনি, গাংচিল, ইস্টিকুটুম, তাজ, মাছরাঙ্গা ইত্যাদি রেস্টুরেন্টে পছন্দের খাবার খাওয়া।

থাকার ব্যবস্থা: কবি চন্দ্রাবতী মন্দিরের আশেপাশে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে কিশোরগঞ্জ সদরে রিভার ভিউ, গাংচিল, নিরালা, উজানভাটি, ক্যাসেল সালাম নামে বেশ কিছু ভাল মানের আবাসিক হোটেল রয়েছ। এছাড়া অনুমতি সাপেক্ষে জেলা সদরের সরকারি ডাক-বাংলোতে থাকতে পারবেন।


আরও খবর

অরণ্যযাপনের আগে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন

বৃহস্পতিবার ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩