ঝিনাইদহে সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ভিপিসহ ৩ শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাননি বরং তাদের হত্যা করা হয়েছে দাবি করে আদালতে মামলা হয়েছে।
মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরানকে প্রধান করে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বুধবার ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলটি করেন নিহত ভিপি সাইদুর রহমান মুরাদের বাবা বাদশা মোল্লা। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আল-ইমরান ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম হাসান সনি, তন্ময় চক্রবর্তী, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান আরিফ বিশ্বাস, কর্মী লিয়ন, মুস্তাকিম, কাজী ফরহাদ, নয়ন, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রাব্বি ওরফে অর্ক, সাজেদুর রহমান সাজে, আসাদ, তৌফিক, ওলিউল্লাহ, সংগ্রাম জোয়ার্দ্দার, চুন্নু, লালু, সঞ্জু, সাদী, ইকরামুল ইসলাম ও মামুন।
আসামিদের সবাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরানের অনুসারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছিল, সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে ডিভিএম ডিগ্রির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে হঠাৎ করেই বিরোধ শুরু হয় কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস সজীবুল হাসানের সঙ্গে ফাহিম হাসান সনির।
বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ৭ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাগর হোসেন ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি মুরাদ, জিএস সজিবুলসহ তাদের অনুসারীদের শহরের স্বণকার পট্টী এলাকায় ডাকেন।
সেখানে আলোচনা করে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে রাত ১০টার দিকে জোহান ড্রিম পার্ক এলাকায় মুরাদ, সজীবুলসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এতে সজীবসহ দুজন গুরুতর আহত হন।
এ অবস্থায় সেখান থেকে একটি মোটরসাইকেলে পালানোর চেষ্টা করেন মুরাদ, সমরেশ ও তৌহিদ। পরে ১৮ মাইল নামক এলাকায় পৌঁছালে সড়ক দুর্ঘটনায় তারা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
এ ঘটনার পরপরই নিহতদের পরিবার অভিযোগ করে, পেছন থেকে ধাওয়া করার কারণেই ওই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তবে ঘটনার কয়েকদিন পর এবার তাদের অভিযোগ- দুর্ঘটনায় নয়, ওই তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করছি, ন্যায়বিচার পাবো।’
নিহত ভিপি মুরাদের বাবা বাদশা মোল্লা বলেন, ‘আমার প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের মধ্যে আশার আলো ছিল মুরাদ। কিন্তু নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে নিভে গেছে তার জীবন-প্রদীপ।’
তিনি জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে তা গ্রহণ করেনি পুলিশ। পরে তারা আদালতের শরণাপন্ন হন।