Logo
শিরোনাম

দৃষ্টির আড়ালে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত সেই বটগাছ

প্রকাশিত:সোমবার ২০ জুন ২০22 | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৮৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

কৈশরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে যে বটগাছের নিচে বসে বাঁশি বাজাতেন কবি নজরুল, যে গাছ ঘিরে গড়ে উঠেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, সেই গাছটিই আজ সীমানা প্রাচীরের আড়ালে, অনাদরে দাঁড়িয়ে আছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কবির নামে দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর সেই প্রতিষ্ঠান কবির স্মৃতিবিজড়িত বটগাছটি বাইরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে।

ইতিহাস বলছে, ১০৭ বছর আগে ময়মনসিংহের ত্রিশালে এসেছিলেন কিশোর দুখু মিয়া। দুখু মিয়ার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে দারোগা রফিজউল্লাহ তাকে ভর্তি করান দরিরামপুর ইংরেজি হাইস্কুলে (বর্তমান নজরুল একাডেমি)। স্বাধীনচেতা নজরুল মাঝেমধ্যে স্কুল বাদ দিয়ে নামাপাড়া শুকলি বিলের পাশে বটগাছের নিচে বসে বা অনেক সময় গাছে চড়ে বাঁশি বাজাতেন। যে বটগাছে বসে দুখু মিয়া বাঁশি বাজাতেন, সেই গাছটিই এখন নজরুল বটবৃক্ষ নামে পরিচিত।

নজরুলের স্মৃতি ধরে রাখতে এই বটবৃক্ষকে কেন্দ্র করেই নজরুলপ্রেমীরা দাবি করেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। সেই বটগাছের পাশেই শুকনি বিলে ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ১৫ বছরে পদার্পণ করা বিশ্ববিদ্যালয়টি পিছিয়ে না থাকলেও অনাদর আর অবহেলায় রয়েছে বটগাছটি।  শুরুতে মাত্র ১৫ একর জমির ওপর নির্মিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। শুরু থেকে বটগাছের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থাকলেও ধীরে ধীরে ভবন নির্মাণের নামে গাছটি আড়াল করা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় বটগাছটিকে বাইরে রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর গড়ে তোলে  প্রশাসন। এতে নজরুলের স্মৃতিধন্য গাছটি ক্যাম্পাসের বাইরে ও ভবনের আড়ালে চলে যায়।

জানা যায়, সত্তরের দশকে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ম্যাজিস্ট্রেট পিএ নাজির নজরুলের  স্মৃতিবিজড়িত বটগাছের গুরুত্ব অনুভব করে প্রথমবারের মতো এর চারপাশে পাকা বেদী করেন। নজরুল গবেষক এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজের উপ-পরিচালক রাশেদুল আনাম বলেন, কালের পরিক্রমায় বটগাছ ব্যতীত নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত সব জায়গার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংস্কার সাধিত হলেও একমাত্র জীবন্ত কিংবদন্তী হিসেবে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে বটগাছটি। যেহেতু নজরুলের নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচিত বটগাছটিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা।

এ প্রসঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. হাফিজুর রহমান জানান, প্রথম দিকে আমরা জানতাম বটগাছের জমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তাই অধিগ্রহণে জটিলতা ছিল। তবে সম্প্রতি আমরা জানতে পারি, এই জমিটি মালিকানাধীন। নজরুলের স্মৃতি ধরে রাখতে গাছটির সংরক্ষণ প্রয়োজন। আমরা পরবর্তী পরিকল্পনায় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমি কিছুদিন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। এর আগে কখনো এ ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি বলে জেনেছি। আমাদের জাতীয় কবির স্মৃতি ধরে রাখতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নজরুল বটবৃক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নিয়ে আসার আশ্বাস দেন তিনি। 

নিউজ ট্যাগ: ময়মনসিংহ

আরও খবর

আঙ্গুল ফোটানো কি খারাপ?

শনিবার ০২ জুলাই 2০২2