Logo
শিরোনাম
বেলাবতে ধর্ষণে অন্ত:সত্ত্বা ভিখারী হাসপাতালে

ধর্ষকের সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত জনপ্রতিনিধির

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ এপ্রিল 20২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | ২৮৫০জন দেখেছেন
Image

নরসিংদী প্রতিনিধি:

নরসিংদীর বেলাবতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় কাতরাচ্ছেন ধর্ষণের ফলে ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা এক নারী ভিখারী (৪০)। উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

৬ মাস আগে ভিক্ষাবৃত্তি শেষে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের মৃত আকু মিয়ার ছেলে শাহাবদ্দীন (৫০) ওই নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শাহাবদ্দীন ধর্ষণের দায় স্বীকার করে সুস্থ হলে ওই নারীকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে।

চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, প্রায় ৬ মাস আগে বেলাব বাজার হতে ভিক্ষাবৃত্তি শেষে বাড়ি ফিরছিলেন বিধবা এই নারী। পথে একই গ্রামের মৃত আকু মিয়ার ছেলে শাহাবদ্দীন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে খুন করার হুমকি দেয়া হয়। পরে আবারও দ্বিতীয় দফায় জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করা হয়। এতে ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়া ওই নারী এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে ইনফেকশনের কারণে মুমূর্ষ অবস্থায় উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় অযত্ন অবহেলায় ঠায় হয়েছে তার। অতিরিক্ত শারিরীক দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে স্পষ্ট করে কথা বলতে পারছেন না। ভয় আর আতংকে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন সবার দিকে। ১১ দিন ধরে অমানবিকভাবে একাকী হাসপাতালের বারান্দায় দিনরাত কাটছে তার। ধর্ষকের বিচার দাবি করলেও সুস্থ হওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতি কর্তৃক ধর্ষকের সাথে বিয়ে দেয়ার আশ্বাস পেয়ে নীরব ভুক্তভোগী ওই নারী। দিনদিন অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা না করাতে পারলে তার মৃত্যু হতে পারে শংকা করছেন স্থানীয়রা।

রাকিব নামে একজন কলেজ শিক্ষার্থী ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করলেও তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ দুলাল ও পাটুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফরানুল হক ভূইয়া জামান। প্রায় ৭ হাজার টাকা এনে ধর্ষিতার চিকিৎসার কাজে ব্যয় করছেন বলে জানান ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া। স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনাটি অবগত না করে ধর্ষিতা নারী সুস্থ হবার পর ধর্ষকের সাথে বিয়ে দেয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য। এতে প্রকাশ্যেই চলাফেরা করছেন অভিযুক্ত ধর্ষক শাহাবদ্দীন।

বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মেহেরবা পান্না বলেন, ৪ মাসের গর্ভবর্তী হয়ে ওই নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তার সেবা করার মত কেউ নেই। এ কারণে হয়তো তার অবস্থা একটু খারাপ হচ্ছে।

অভিযুক্ত শাহাবুদ্দীন ধর্ষণের দায় স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি ধর্ষণ করেছি, চেয়ারম্যান মেম্বার ও এলাকাবাসীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুস্থ হলে আমি তাকে বিয়ে করবো।

পাটুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইফরানুল হক ভূইয়া জামান ও ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। আগে ধর্ষিতা সুস্থ হওয়ার পর আমরা সামাজিকভাবে ধর্ষক শাহাবুদ্দীনের সাথে ওই নারীর বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবো।

বেলাব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম কুমার রায় বলেন, ঘটনাটি আপনাদের মাধ্যমেই প্রথম জানতে পেরেছি। জানামতে এ ব্যাপারে কেউ থানায় কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর