Logo
শিরোনাম

বলিউডের গলার কাঁটা বয়কট

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ ডিসেম্বর ২০22 | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৮০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

একের পর এক হিন্দি সিনেমা বয়কটের ডাক দিচ্ছে নেটিজেনরা। যার সর্বশেষ শিকার শাহরুখ-দীপিকার পাঠান। কখনো তারকাদের পুরোনো সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভাইরাল করে, কখনো ধর্ম বা অশ্লীলতার অজুহাতে সিনেমা বয়কটের ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু কেন এই বয়কট? তারকাদের প্রতি ব্যক্তিগত উষ্মা ছাড়াও এর পেছনে কাজ করছে রাজনৈতিক চক্র।

পাঠান: ২০১০ সালে মাই নেম ইজ খান মুক্তির সময় সিনেমা হল ভাঙচুর, পোস্টার ছেঁড়া, শাহরুখের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। দিন বদলেছে। স্লোগান-ভাঙচুরের জায়গা নিয়েছে হ্যাশট্যাগ। শাহরুখের মুক্তিপ্রতীক্ষিত সিনেমা পাঠানকে ঘিরে এই বয়কট হ্যাশট্যাগ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। অভিযোগ তোলা হয়েছে, পাঠানের বেশরম গানটি অশ্লীল। কিন্তু এমন গান বলিউডে হামেশাই হয়েছে, কখনো অভিযোগ শোনা যায়নি। শাহরুখের সিনেমা বলেই কি দমিয়ে রাখার চেষ্টা? জানতে হলে ফিরে যেতে হবে পাঁচ বছর আগে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে শাহরুখ সমর্থন না করায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রবীণ তোগাড়িয়া বয়কট শাহরুখ ক্যাম্পেইন শুরু করেন। অনেকে বলছেন, পুরোনো সে রাজনৈতিক ইস্যু আবারও উসকে দেওয়া হয়েছে পাঠানকে কেন্দ্র করে। অশ্লীলতার কথা তো কেবল অজুহাত।

লাল সিং চাড্ডা: বয়কট নিয়ে ভুগতে হয়েছে আমির খানকেও। নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে মেধা পাটেকরের সঙ্গে এক মঞ্চে প্রতিবাদ করায় গুজরাটে আমিরের ফানা নিষিদ্ধ করা হয়। এ বছর লাল সিং চাড্ডা মুক্তির আগেও অনলাইনে প্রবল নেতিবাচক জনমত ছড়ানো হয়েছে। মুক্তির পর রাজনৈতিক চাপে অনেক সিনেমা হলে শো বাতিল করা হয়েছে। ফলে ব্যবসায়িকভাবে মার খেয়েছে সিনেমাটি। আমিরের ক্ষেত্রেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে পুরোনো সাক্ষাৎকার। নিরাপত্তার ঘাটতির কারণে ভারতে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকার কথা বলেছিলেন আমির। সেটাকেই সামনে এনে আমিরকে দেশদ্রোহী অপবাদ দিয়ে বয়কটের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে লাল সিং চাড্ডাকে।

লাইগার: বয়কট করা কোনো সিনেমার পক্ষে মন্তব্য করলেও তাঁর ওপর ঝরছে ক্ষোভ। যেমনটা হয়েছে বিজয় দেবেরাকোন্ডার ক্ষেত্রে। আমিরের লাল সিং চাড্ডা যখন বয়কটের ডাক দেওয়া হয়, তখন বিজয় বলেছিলেন, একটি সিনেমা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনি শুধু আমির খানকে প্রভাবিত করছেন না, আপনি হাজার হাজার পরিবারের ক্ষতি করছেন, যারা এর ফলে কাজ হারাচ্ছে। এই বয়কট যাঁরা করছেন, তাঁদের সবাইকে বয়কট করা উচিত। বিজয়ের মতো দক্ষিণী অভিনেতাদের প্রতি দর্শকের ভালোবাসার কমতি নেই। তবুও বলিউডে বিজয়ের ডেবিউ সিনেমা লাইগার-এর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে অনেকে। ফলাফল, সিনেমা হলে করুণ পরিণতির সাক্ষী হতে হয়েছে লাইগারকে।

শমশেরা: এক সাক্ষাৎকারে রণবীর কাপুর বলেছিলেন, তিনি গরুর মাংস খেতে ভালোবাসেন। ব্যস, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো রণবীরের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। চার বছর পর সিনেমা হলে ফিরে যে শমশেরা দিয়ে দর্শক মাতাতে চেয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি এক সপ্তাহও চলেনি। চার হাজারের বেশি হল পেয়েও প্রথম সপ্তাহে কালেকশন হয় ৪০ কোটির মতো। অথচ শমশেরার বাজেটই ছিল ১৫০ কোটি। অর্থাৎ সুপার ফ্লপ। রণবীরের ব্রহ্মাস্ত্র মুক্তির সময়ও এই বয়কট ট্রেন্ড মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তবে এ সিনেমার ক্ষেত্রে বয়কট তেমন সুবিধা করতে পারেনি। অবশ্য রণবীর পরে বলেছেন, বয়কট ট্রেন্ডের কারণে শমশেরার ব্যবসা খারাপ হয়নি। সিনেমাটি ব্যবসা করতে পারেনি, কারণ কনটেন্ট খারাপ ছিল!


আরও খবর